জীবনের অন্তিম লগনে পৃথিবীর পশ্চিম গগনে 

জীবনের অন্তিম লগনে পৃথিবীর পশ্চিম গগনে 

সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে কানাডার অভিবাসীদের সম্বন্ধে বলার ব্যাপারে আমি উপযুক্ত ব্যক্তি কি না। কারণ জীবনের প্রারম্ভে বা মধ্য গগনে আমি তো কানাডায় অভিবাসী হয়ে আসিনি। এসেছি প্রায় জীবনের অন্তিম লগনে, অর্থাৎ ৭০ বছর বয়সে। কানাডার অভিবাসী জীবনের অম্লমধুর অভিজ্ঞতাও  আমার জীবনে  বিশেষ নেই। আমি এখানে এসেছি ভারতবর্ষে আমার কর্মজীবন শেষ করে, প্রায় অনেকটা অতিথির মতো। সত্যি কথা বলতে গেলে, ওই হিসেবে আমার তো কানাডার অভিবাসী জীবনের কোনো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নেই। শুধু পরোক্ষ অভিজ্ঞতা, অর্থাৎ যারা এখানে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম করেছেন তাদের অভিজ্ঞতার কথা শুনে।

কানাডার শিল্পী ও শিল্পকলা : সেকাল ও একাল

কানাডার শিল্পী ও শিল্পকলা : সেকাল ও একাল

কানাডার শিল্প সেই দেশে বসবাসকারী বিভিন্ন জাতির মতোই বহুমুখী এবং বৈচিত্র্যময়। কানাডা তার বিশাল ও বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য সুপরিচিত, একই সাথে একটি সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময় শৈল্পিক ঐতিহ্য গড়ে তুলেছে। আদিবাসী শিকড় থেকে সমকালীন প্রকাশ পর্যন্ত, কানাডিয়ান শিল্প দেশের বিশাল প্রাকৃতিক দৃশ্য, সাংস্কৃতিক মিশ্রণ এবং ঐতিহাসিক ঘটনাসমূহের বর্ণনাগুলিকে প্রস্ফুটিত করে। কানাডার শিল্পের বিবর্তন সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানতে পারা যায় এই দেশের শিল্প ঐতিহ্যকে গঠনকারী বেশ কিছু প্রভাবশালী শিল্পীদের কথা।

সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব

সুস্থ সমাজ বিনির্মাণে নাগরিক অধিকার ও দায়িত্ব

মানুষ প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট্যেই, সহজাতভাবেই মুক্ত, অবাধ থাকতে চায়। জন্মজাত রিপুর তাড়নে, ক্রীয়াশীল থাকতে চায়। সামাহীন ইচ্ছাকে পূরণ করতে চায়। জৈবিক ক্ষুধা নিবারণ করতে চায়। মানুষের এ চাওয়া অতলান্তিক, অপরিমিত। মানুষের অনিয়ন্ত্রিত চাওয়া এবং পরিণামে কাড়াকাড়ি, হানাহানি, হিংসা, হিংস্রতা, বর্বরতা মানুষের মধ্যযুগীয় জীবন ধারার কথা মনে করিয়ে দেয়।  মধ্যযুগীয় সেই বর্বর, পাশবিক জীবনধারা থেকে মানুষ নিজের প্রয়োজনে, চেষ্টায় এবং বুদ্ধিমত্তায় বেরিয়ে আসতে পেরেছে একটি সভ্য মানবিক জীবন যাপনের কাঠামো নির্মাণ করতে পেরেছে। মানুষের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্র প্রশস্ত হওয়ার সাথে সাথে, মানুষ তার ইচ্ছাশক্তিকে চালিকাশক্তিতে পরিণত ক’রে, স্বপ্নকে একে একে ছুঁয়ে যাচ্ছে। মানুষ উন্নত থেকে উন্নততর জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। তার জ্ঞান-বুদ্ধির বিকাশ এবং প্রয়োগের মাধ্যমে নিজের ভেতরে থাকা পশুত্ব নিয়ন্ত্রন করে বিবেক বিবেচনা ও মানবিকতার মেলবন্ধনে একটি সুস্থ সহায়ক এবং সহযোগিতার বাতাবরণে আধুনিক সমাজ রাষ্ট এবং বিশ্বব্যবস্থা নির্মাণ করেছে মানুষ।

ষড়ভুজের মণ্ডল কানাডা

ষড়ভুজের মণ্ডল কানাডা

দেশ দেশান্তরে ঘড়ির কাটা কখনও এক থাকে না। কারণ একেক দেশ ওই জায়গার নির্দিষ্ট সময়ের মানদণ্ড মেনে চলে। আমরা যখন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভ্রমণ করি তখন সেভাবে ঘড়ি ঠিক করে নিতে হয়। সর্বউত্তরের নুনাভুট, ইউকন থেকে শুরু করে সর্বদক্ষিণের প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড, সেন্ট জোনস দ্বীপপুঞ্জ, নিউ ফাউল্যান্ড। আমরা  বলছি আটলান্টিক সাগর পাড়ের শ্বেতকন্যা কানাডার কথা। তার সীমানা এত দূর দূরান্তে বিস্তৃত যে তাকে ছয়টি সময় নির্ঘন্ট মেনে চলতে হয়। আয়তনে রাশিয়ার ঠিক পরেই অবস্থান করা কানাডার সময়ের মান-মণ্ডল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে যায়। ওখানেও ছয়টি ভিন্ন ঘড়ি চলে। সবচেয়ে বেশি ভিন্ন ভিন্ন সময়ের হিসাবে চলে রাশিয়া – মোট এগারো বার আপনাকে ঘড়ির কাটা পালটাতে হবে ওই দেশে বেড়াতে গেলে।

কানাডার আদ্যন্ত

কানাডার আদ্যন্ত

১৮৬৭ সালে কানাডা কনফেডারেশনে অন্তর্ভুক্ত হলেও কানাডার ইতিহাস প্যালিও-ভারতীয় আগমন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত হাজার হাজার বছর বিস্তৃত। ইউরোপিয়দের আগমনের পূর্বে বর্তমান কানাডা জুড়ে আদিবাসীদের নিজস্ব সংস্কৃতি, বানিজ্য, সামাজিক সংগঠন এবং আধ্যাত্মিক বিশ্বাস ছিল যা ইউরোপীয়দের আগমনের পর সময়ের সাথে প্রায় সবকিছুই বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং পরে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে বিলুপ্ত ইতিহাস জনসম্মুখে আসে। প্রত্নতাত্ত্বিক এবং আদিম জেনেটিক প্রমাণ ইঙ্গিত করে যে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ছিল শেষ মহাদেশ যেখানে মানুষ স্থানান্তরিত হয়েছিল। প্রায় ৫০,০০০–১৭,০০০ বছর আগে মানুষ সাইবেরিয়া থেকে উত্তর-পশ্চিম উত্তর আমেরিকায় বেরিং ল্যান্ড ব্রিজ  পেরিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়। সেই সময়ে, তারা লরেনটাইড আইস শীট দ্বারা হাজার হাজার বছর ধরে আলাস্কা এবং ইউকন পর্যন্ত আটকে ছিল। প্রায় ১৬,০০০ বছর আগে, তুষার গলনের ফলে মানুষ দক্ষিণ এবং পূর্ব বেরিঙ্গিয়া বরাবর কানাডায় প্রবেশ করে।

ফুল নিয়ে কথা

ফুল নিয়ে কথা

প্রকৃতিকে যদি আমরা একজন মূক ও বধির চিত্রকর মনে করি, যিনি কথা বলেন বা শোনেন না, শুধু আপনমনে নানা রকমের ছবি এঁকে যান তাহলে বেশ হয়। আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে আমরা প্রকৃতিকে ধর্ম বলে মেনে নিয়েছি কারণ প্রকৃতির মাঝেই মানুষের জীবন বিবর্তিত হয়ে থাকে। একাগ্রচিত্তে লক্ষ করলে প্রকৃতির মাঝে কতগুলি শাশ্বত গুণ দেখা যায় যেমন সে নিরাসক্ত, নির্মোহ আর নির্বিকার। কিন্তু এসব অনাসক্তি সত্ত্বেও সে নিরন্তর কর্মরত। এই সনাতন কর্মধারা অনিবার ও অশেষ।