কানাডা আমার দেশ

কানাডা আমার দেশ

ষড়ঋতুর  দেশ থেকে  চার ঋতুর দেশে এসে পৌঁছলাম। একটু অবাক ভাবনা মাথার ভিতরে  ছয় ঋতু না হয়ে চার ঋতু হয় কীভাবে! তখন শীতের শেষ,ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা তুষার পড়ে আছে এখানে ওখানে। বসন্ত শুরু হয়ে গেছে কিন্তু  হাড় কাঁপিয়ে দেয়া শীত। শীতের দেশ হিসাবেই জানতাম কানাডাকে। এমন তুষার আবৃত শীতের সাথেই অভ্যস্থ হয়ে উঠতে হবে। অথচ কিছুদিন যেতে না যেতে দেখলাম বসন্তবাহার। এমন বসন্ত  কখনও দেখিনি আর।  এত ফুল ফুটে এত পাখি গায় এখানে। আমাদের দেশে বসন্তের ফুলগুলো ম্রিয়মান মলিন ধূসর ধুলায় ঢাকা। অথচ কানাডায় চকচকে রঙের বাহার। পাতাবিহীন গাছে শুধু ফুল ।

কানাডার প্রকৌশল, কারিগরী ও প্রযুক্তি উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

কানাডার প্রকৌশল, কারিগরী ও প্রযুক্তি উন্নয়নের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

সৃষ্টির আদিকাল থেকেই প্রকৌশল বা কারিগরী বিষয়ে জ্ঞান অর্জন কিংবা এর প্রয়োজনীয়তা জনমানসে অনুভূত হয়েছে। কিন্তু এর স্বরূপটা কেমন হবে তার কোন প্রকৃতরূপ উদঘাটিত হবার প্রয়োজনীয় অনুঘটক হিসেবে কোন বিষয়ের এককরূপ মানুষের সীমাবদ্ধ জ্ঞানের পরিধিতে অনুধাবন করার সম্যক ধারণা তৈরি হবার কোন পন্থা তখনও তৈরি ছিল না। তবে সময়ের সাথে সাথে মানুষের স্বাভাবিক প্রয়োজনীয়তাগুলি দীর্ঘভাবে অনুভূত হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে স্বল্প পরিসরে হলেও মানুষ তার চিন্তা, মননে ও কারিগরী ভাবধারায় তা বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা নিরন্তর অব্যাহত রেখেছে। একই সূত্রের হাত ধরে সহস্র সহস্র বছর ধরে মানুষ ক্রমশঃ তাদের মৌলিক এবং প্রয়োজনীয় চাহিদাগুলি চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়েছে।

কানাডা ও ইংরেজি

কানাডা ও ইংরেজি

যেকোন দেশে অভিবাসনের ক্ষেত্রে সে দেশের ভাষা জানাটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়াও তার ব্যাতিক্রম নয়। আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কানাডার সমাজে মিশে যাওয়া পর্যন্ত, প্রতিটি ধাপে ভাষার দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। যদিও কানাডার দাপ্তরিক ভাষা দুটো – ইংরেজি এবং ফ্রেঞ্চ; তবে কুইবেক প্রদেশ ছাড়া বাকি সব প্রদেশেই ইংরেজির রাজত্ব। তাই ইংরেজি হোক বা ফ্রেঞ্চ, প্রতিটি প্রদেশেই ভাষা দক্ষতা অর্জনের জন্য কানাডীয় সরকারসহ বিভিন্ন সেটলমেন্ট  প্রতিস্থানগুলো বিনামূল্যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে রেখেছে এদেশের নতুন অভিবাসীদের জন্য। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন অভিবাসীরা প্রয়োজনীয় ও সময়উপযোগী তথ্যের অভাবে এই সুযোগটি নিতে ব্যর্থ হন। যেহেতু আমরা বাংলাদেশিরা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি, তাই চেষ্টা করবো এই লেখাটির মাধ্যমে প্রবাসী কানাডিয়ানদের ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা এবং সরকারি ও বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ব্যাখ্যা প্রদান করতে।

কানাডায় নারী অধিকার

কানাডায় নারী অধিকার

‘নারী’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন,বিশ্বে যা কিছু মহান চির কল্যাণকর,অর্ধেক তার করিয়াছে নারী,অর্ধেক তার নর। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যায় নারীর ইতিহাস বঞ্চনা,বৈষম্যের ইতিহাস। যুগ,যুগ ধরে নারীর শ্রম, নারীর অবদানকে খুব কমই স্বীকার করা হয়েছে। আর তাই সমাজে, রাস্ট্রে নারীর অবস্থানকে ধরে রাখার জন্য নারীকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক লম্বা পথ। করতে হয়েছে অনেক সংগ্রাম। নারীর অধিকার বলতে আমরা আসলে কী বুঝি? নারীর অধিকার হচ্ছে তার মৌলিক মানবাধিকার, যা মূলত সহজাত, সর্বজনীন, অবিচ্ছেদ্য এবং অলংঘনীয়। যা ৭০ বছর আগে জাতিসঙ্ঘ  সনদেও সংরক্ষণ করা হয়েছে বিশ্বের প্রতিটি মানুষের জন্য।

কানাডার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা এবং অর্জনসমূহ

কানাডার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা এবং অর্জনসমূহ

খেলাধুলায় কানাডার একটি ঐতিহ্যবাহী সুদীর্ঘ ইতিহাস ও একরাশ অর্জন রয়েছে। যদিও প্রচীনকালে কানাডায় ইউরোপীয় অগ্রগামী বসতিগুলোতে, বেঁচে থাকার গুরুতর কাজের তুলনায় খেলা তুলনামূলকভাবে গুরুত্বহীন ছিল, তবে সামাজিক এবং বিনোদনমূলক কিছু কার্যক্রম প্রচলিত হয়েছিল। ফরাসি অভিবাসীরা ফ্রান্স থেকে তাদের সামাজিক জমায়েতের প্রতি ভালোবাসা উত্তরাধিকার সূত্রে নিয়ে এসেছিল। ব্রিটিশ সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের আগমনের সময় তারা ক্রিকেট এবং অশ্বারোহীর মত খেলা সঙ্গে নিয়ে এসেছিল। তাছাড়া স্কটরা বিশেষ করে উত্তর আমেরিকায় গল্ফ এবং কার্লিং চালু করেছিল।

কানাডা: রূপালী সৌন্দর্যের দেশ

কানাডা: রূপালী সৌন্দর্যের দেশ

কানাডার জনসংখ্যা ৩৮.৯৩ মিলিয়ন – অর্থাৎ প্রায় চার কোটির কাছাকাছি। এর আয়তন ৯,৯৮৪,৬৭০ বর্গ কিলোমিটার। প্রতি চার বর্গ কিলোমিটারে এখানে মাত্র একজন মানুষ বাস করেন। কেবলমাত্র ধারণা দেওয়ার জন্য বলছি কানাডার মাঝে প্রায় ৬৮টি বাংলাদেশকে ঢোকানো যাবে। দেশটিতে ১০ টি প্রদেশ এবং ৩টি টেরিটোরি রয়েছে।
কানাডার ভৌগলিক বিস্তৃতি যেমন মনোমুগ্ধকর তেমনি বৈচিত্র্যময়। দেশটি অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক বিস্ময় যেমন নায়াগ্রা জলপ্রপাত, ব্যানফ ন্যাশনাল পার্ক এবং ইউকনের নর্দান লাইটস নিয়ে সমৃদ্ধ। প্রাকৃতিক আশ্চর্যের মহাদেশ উত্তর আমেরিকার উত্তরঅংশে অবস্থিত। আটলান্টিক থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত প্রসারিত কানাডা – যা বৈচিত্র্যময় হিসাবে অত্যাশ্চর্য।

কানাডীয় শিক্ষাব্যবস্থা – প্রাথমিক স্কুল

কানাডীয় শিক্ষাব্যবস্থা – প্রাথমিক স্কুল

বহুজাতিক দেশ কানাডার শিক্ষাব্যবস্থা সামাজিক-অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। শিক্ষা এমন একটি আলোকিত বাতিঘর যা কিনা শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে এবং সঙ্কীর্ণ দিগন্তের বাইরে স্বপ্ন দেখিয়ে ভবিষ্যতের আলোকিত পথগুলোকে চিহ্নিতকরে অনায়াসে। শ্রেণীকক্ষে যে জ্ঞানের বীজ বপন করা হয় তা সৃজনশীলতার সাথে লালন করে, সমালোচনামূলক চিন্তাধারার দক্ষতা দিয়ে গড়ে তোলা হয় একটি সুসজ্জিত বাগান।

কানাডার রাজনীতি নিয়ে বেলা-অঞ্জন সংলাপ

কানাডার রাজনীতি নিয়ে বেলা-অঞ্জন সংলাপ

প্রায় প্রতি সপ্তাহের মতো এবারও তারা ঘড়ির কাটা গুনে তাদের পছন্দের জায়গাটায়  এসে বসলো। স্কারবোরো ব্লাফসকে পেছনে রেখে এই জায়গাটা দারুণ সুন্দর – সামনে বয়ে গেছে অন্টারিও লেক, আকাশে উড়ছে গাংচিল, বাতাসে বসন্তের গন্ধ। প্রকৃতির সান্নিধ্যে তারা কত কিছু নিয়েই কথা বলে। প্রেম, ভালোবাসার প্যানপ্যানানি  বিষয় নয়, বা নয় কে কাকে সারা সপ্তাহ না দেখে মিস করছে। মিস করলেও মুখ ফুটে সেসব বলতে দুজনেরই বাধে। হাজার হলেও কিশোর কিশোরী তো নয়। তবে কথা শুরু হলে কথার খৈ ফুটতে থাকে বেলার মুখে। অঞ্জন বেশির ভাগ সময় শুনেই যায়। যদি মনে করে, কোনো বিষয়ে বেলার হাইপোথেসিসে একটু গলা না মিলিয়ে বিপরীত দিকটা তুলে ধরবে, তখন গলার স্বর যতটা সম্ভব নীচে নামিয়ে বলতে শুরু করে।

কানাডার আদিবাসী জনগণ: সত্য উদঘাটন ও পুনর্মিলন

কানাডার আদিবাসী জনগণ: সত্য উদঘাটন ও পুনর্মিলন

কানাডার আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যাদের সাধারণত ফার্স্ট নেশনস, ইনুইট এবং মেটিস নামে চিহ্নিত করা হয়, তারা কানাডার প্রাচীনতম বাসিন্দা। প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত তাদের জীবন ও সমাজ ব্যবস্থা একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং সংস্কৃতির ধারক। তাদের বসবাসের স্থানগুলি দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে বিস্তৃত, যেমন উত্তর মেরু অঞ্চলের তুষারাবৃত ভূমি, পশ্চিমের পর্বতমালা, কেন্দ্রীয় প্রেইরি অঞ্চল এবং পূর্বের বনাঞ্চল। এই বৈচিত্র্যময় ভৌগোলিক অবস্থানগুলি তাদের সমাজের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করেছে।

কানাডার শিক্ষাব্যবস্থা

কানাডার শিক্ষাব্যবস্থা

কানাডার শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পর্কে আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হিসাবে। তারপরে কন্যার শিশুকাল থেকে শিক্ষার পথে ধাপে ধাপে তার এগোনোর অভিজ্ঞতা থেকে। যতটা জানি, তাই লিখছি। কিছু ভুল যে থাকবে না তা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। শিক্ষাব্যবস্থার দায়িত্ব কেন্দ্রের নয়, প্রতি প্রদেশের – কী করে উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ নাগরিক হিসাবে তৈরী করা যাবে,  তারা যাতে আত্মনির্ভর হয়ে সমাজের বিভিন্নরকমের দায়িত্ব পালন করতে পারে। সংক্ষেপে বলি, কানাডাতে পাবলিক স্কুল বাধ্যতামূলক এবং তার জন্য পয়সা লাগে না – প্রাদেশিক সরকার (বা টেরিটরি) এর ব্যয় বহন করে।

কানাডায় বিজ্ঞান: কিছু কথা

কানাডায় বিজ্ঞান: কিছু কথা

উন্নত জীবন ব্যাবস্থায় বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কানাডা সরকার সব সময় অনুধাবন করে এসেছে। বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে কানাডা সুপেয় পানির যেমন ভাগ্যপ্রসন্ন দেশ তেমনি অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদেও। OECD (Organization for Economic Co-operation and Development) দেশগুলোকে মধ্যে কানাডা হলো দ্বিতীয় রাংকিং এ আইস্ল্যাণ্ড এর পরেই যার মাথাপিছু পানি ব্যবহার হার হিংসাত্মক পর্যায়ে। এসব বিষয় মাথায় রেখে কানাডা বিজ্ঞানেও লিডিং রোলে অৰ্থাৎ নেতৃত্বের অবস্থানে আছে. অর্থনীতির পাশাপাশি উন্নত জীবনের বড়ো হাতিয়ার যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার সেটা কানাডা শুরু থেকেই বুঝে বিজ্ঞানকে কাজে লিগিয়েছে নানা ক্ষেত্রে।

কানাডার কৃষি

কানাডার কৃষি

অন্য-বস্ত্র এবং বাসস্থানসহ মানুষের নানান মৌলিক চাহিদার যোগান  আসে কৃষি থেকে। আর তাই, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কৃষি  হয়ে ওঠে এক অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা আজ এই লেখার মাধম্যে পাঠকদেরকে কানাডার কৃষি সম্পর্কে একটি মৌলিক ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। আমরা জানি, পানি , মাটি ও জলবায়ু কৃষির অন্যতম উপাদান। কানাডার কৃষিকে বুঝতে হলে এই তিনটি বিষয়ের আলোকে কানাডার কৃষি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে এবং সেই  সাথে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত দেশগুলোর জলবায়ু ও ঋতুচক্র বিষয়েও  কিছুটা ধারণা থাকা আবশ্যক। আমরা এই লেখার শুরুতে কানাডার জলবায়ু , ঋতুচক্র, কানাডার ভৌগোলিক অঞ্চলের পরিচিতি, কানাডায় জন্মানো প্রধান প্রধান শস্যসমূহ, কানাডার মৎস্যসম্পদ এবং পশুসম্পদ বিষয়ে আলোচনা শুনবো।