আমাদের কথা

সুব্রত কুমার দাস

কানাডা জার্নাল একসময় ছিল টরন্টো থেকে প্রচারিত এনআরবি টেলিভিশনে সুব্রত কুমার দাস উপস্থাপিত একটি অনুষ্ঠানের নাম। ২০১৯ সালে প্রিয় এই টেলিভিশন চ্যানেলে কানাডা জার্নাল নামে আমরা সেই অনুষ্ঠানটি প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করি। এনআরবি টেলিভিশনের প্রধান মানুষ বন্ধুপ্রতীম এবং সহোদরপ্রতীম শহিদুল ইসলাম মিন্টুর উৎসাহ ও সহযোগিতার কারণেই অনিয়মিত এই আয়োজনটি চালিয়ে যেতে সক্ষম হই আমরা।

২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর কানাডা জার্নাল শুরু করা হয় অনলাইন অনুষ্ঠান হিসেবে। ক্রমে ক্রমে এই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটি কানাডার শত-সহস্র বাঙালির প্রিয় আয়োজন হিসেবে গ্রাহ্য হতে শুরু করে। বাংলাদেশ, ভারত, এমন-কি পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্ত থেকেও বাঙালিদের যুক্ত করে চলতে থাকে এই অনলাইন আয়োজন। বহু বিচিত্র বিষয় নিয়ে কানাডা জার্নালে চলতে থাকে বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা। শত শত দর্শকের প্রেরণা সেই আয়োজনের সাফল্যকে উজ্জ্বল করে তোলে। প্রতিটি পর্ব হাজার হাজার মানুষের আগ্রহের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।  

কিন্তু বাস্তবতা হলো, সাফল্য আসলে প্রতিবন্ধকতাও আসে। আর তাই ঈর্ষাপরায়ণ কিছু মানুষ অপচেষ্টা চালাতে থাকে কানাডা জার্নাল থামিয়ে দিতে। কোভিড-১৯ এর মতো ভয়াবহ এক মহামারীর প্রাদুর্ভাবও মানুষকে তার স্বাভাবিক এই চারিত্র্যবৈশিষ্ট্য থেকে নড়াতে পারেনি। কিন্তু অসৎ মানুষদের সকল অপচেষ্টাকে প্রতিহত করে কানাডা জার্নাল আজ কানাডার বাঙালিদের কাছে প্রিয় একটি নাম। আর এভাবেই ক্রমে ক্রমে সুব্রত কুমার দাস এবং কানাডা জার্নাল হয়ে ওঠে একই অস্তিত্বের দুটি ভিন্ন সত্তা।   

সামগ্রিক এই অগ্রযাত্রাকে বিবেচনা করেই এবছর আমার ৬০তম জন্মদিনের পর সিদ্ধান্ত নেই কানাডা জার্নালকে একটি উদ্যোগ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করবো। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিফলন হিসেবেই এইসব প্রকাশ।

কানাডায় আমার এক দশকের জীবনের শুরু থেকেই কয়েকটি বিষয় লক্ষ করেছি। বাঙালি কবি-লেখকদের গুটিকয়েক পরস্পরকে চেনেন, জানেন। কিন্তু তাঁর বাইরেও রয়ে গেছেন বিপুল সংখ্যক কবি-লেখক যারা নিয়মিত লেখেন; ভালো লেখেন; এমনকি যাঁদের প্রকাশিত বইও রয়ে গেছে। আরও লক্ষ্য করেছি কানাডায় থাকা বাঙালি কবি-লেখকদের সাথে কানাডার মূলধারার কবি-লেখকদের সাথে সংযোগ নেই বললেই চলে। আর তৃতীয় যে বিষয়টি নজরে এসেছে সেটি হচ্ছে কানাডায় জন্ম নেওয়া বা বেড়ে ওঠা বাঙালি ছেলেমেয়েদের বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে ধারণা খুব দুর্বল।

এই দুর্বলতাগুলোকে কাটাতে বিভিন্ন সময়ে নানা উদ্যোগ গ্রহণের চেষ্টা করেছি আমরা। সে-চেষ্টাগুলোতে তরান্বিত করে সামনের দিকে এগোতেই কানাডা জার্নালের সাহিত্য উৎসব ২০২৪।

কানাডা জার্নালের নতুন এই অভিযাত্রায় সকল বন্ধুর সহাস্য সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।