হীরকজয়ন্তী: সুব্রত কুমার দাস গ্রন্থ প্রসঙ্গে

স্বপন কুমার দেব

বাংলাদেশ এবং টরন্টোর সাহিত্যিক ও লেখক সুব্রত কুমার দাসের ৬০তম জন্মবার্ষিক উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে হীরকজয়ন্তী: সুব্রত কুমার দাস গ্রন্থটি। যৌথভাবে সম্পাদনা করেছেন সুজিত কুসুম পাল ও সঞ্জয় মজুমদার।

বইটিতে অনেক গুণীজন লিখেছেন। প্রতিটি লেখা আন্তরিক ও মূল্যবান। গ্রন্থের সম্পাদকীয় নিবেদন পরিপাটি ও ছিমছাম। এতে সুব্রত কুমার দাসের বর্ণময় জীবন নিয়ে একটি স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়। সম্পাদক মহোদয় শেষাংশে লিখেছেন, ‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে দৃশ্যমান হচ্ছে কিছু কিছু অপূর্ণতা।‘ এমনটা ঘটা স্বাভাবিক বলে মনে করি। তবে গ্রন্থ প্রকাশ হবার আগেই ধরা পড়ায় পরিশ্রম ও বিলম্ব হলেও দূর করার সুযোগ ছিল বলেও আমার মনে হয়।

আলোচ্য বই বা গ্রন্থের ব্যক্তিগত গদ্যপর্বে লেখক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন একটি কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন বর্তমানে বাংলাদেশ ও কানাডায় বসবাসরত বাঙালি তরুণ সমাজ ধর্মীয় এবং ঈর্ষার বিষবাস্পে জর্জরিত হয়ে আছেন। আমিও একমত। সাহসী কথাটি লেখার জন্য লেখককে ধন্যবাদ জানাই। সমস্যাটি চিহ্নিত হওয়ায় তা দূর করতে এখন যথার্থ উদ্যোগ প্রয়োজন।

সালমা বাণীর লেখাটি পড়ে জানা যায় সুব্রত কুমার দাসের লেখার ব্যাপ্তির বিশালত্ব সম্পর্কে যা সুব্রতকে অধিক জানতে এবং ওর লেখা পড়তে উৎসাহের সৃষ্টি হয়। ড. গৌরাঙ্গ মোহান্তের লেখাটিও চমৎকার। ওটি থেকে জানা যায় সুব্রতর বহুমাত্রিক চিৎশক্তি ও অবগাহন ক্ষমতা সম্পর্কে। বুঝতে পারি সুব্রত রচিত কানাডীয় সাহিত্য: বিচ্ছিন্ন ভাবনা একটি অমূল্য গ্রন্থ। সুযোগ হলেই পড়বো৷ প্রসঙ্গত জানা যায় তামিল কানাডীয় কবি চ্যারন রুদ্রমুর্থি সম্পর্কে। আহমদ মাযহারের লেখা থেকে পাঠকের কাছে নতুন যে একটি বিষয় জানা হবে তা হলো বইয়ের জগত নামে বই সমালোচনার একটি পত্রিকা ছিল। এই পত্রিকার সঙ্গে সুব্রতর যোগাযোগ ঘটেছিল নির্ভরযোগ্য সব প্রবন্ধ লেখার মধ্য দিয়ে। মধুমতি গড়াই চন্দনা ফুলেশ্বরী মমতাময়ী এসব নদীর নামগুলি উঠে এসেছে লেখক রবিশংকর মৈত্রীর লেখার মধ্য দিয়ে।

গড়াই নদীর সমাপ্তিস্থলে কামারখালী। এখানেই সুব্রত কুমার দাসের জন্ম এবং কৈশোরের বেশ কিছুটা সময় বেড়ে ওঠা। আমার একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে। সুরমা পারের মানুষ আমি। অনেক আগে একাধিকবার ফরিদপুর শহরের ভেতর দিয়ে গিয়ে মধুমতি নদীর ফেরিঘাট অতিক্রম করে সোহাগ কোম্পানির বাসে করে বেনাপোল গিয়েছি। মধুমতি তীরে বিস্তীর্ণ মাঠে সাদা কাশফুল। তারপর একটি ছোট্ট গ্রাম। সেই দৃশ্য মনে পড়ে এখনও।

কামারখালী গ্রামের বৈষ্ণব বাবা-মায়ের সু-সন্তান সুব্রত। এই লেখা থেকে বৈষ্ণব ধর্ম বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যায়। জানা যায় নিকটবর্তী ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী কোড়কদী গ্রামের ইতিহাস যা সুব্রত জানিয়েছিলেন ওর লেখার মধ্য দিয়ে। রবিশংকর মৈত্রীর লেখাটি আকর্ষণীয়।

আরেক লেখিকা তিয়াসা চাকমা জাপানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় পিএইচডি করছেন। ওর লেখা থেকে জাপানের প্রতি সুব্রতর বিশেষ আগ্রহের কথা জানা যায়। সুব্রত এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন এবং লিখেছেন অনেক তথ্যবহুল লেখা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে অনেক বাঙালি লেখকই জাপানের প্রতি একটি আকর্ষণ প্রকাশ করেছেন। তবে জাপানের প্রতি সুব্রতর কেন এ আকর্ষণ ভবিষ্যতে জানার আগ্রহ রইলো। তিয়াসা চাকমার লেখাটি অনেক দিক দিয়েই সমৃদ্ধ।

শহিদুল ইসলাম মিন্টু একজন লেখক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব। ওর লেখায় উঠে এসেছে বাংলা সাহিত্যের প্রথম ওয়েবসাইটের উদ্যোক্তা সুব্রতর কথা। কীভাবে সুব্রত টরন্টোর মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন তার ইতিহাস। লেখক মনিস রফিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ব্যতিক্রমী ছাত্ররূপে দেখতে পান সুব্রতকে যে সুব্রত কানাডাতে এসেও নিজের ভালবাসার জায়গা থেকে স্থানচ্যুত হন নাই। বেছে নিয়েছিলেন ক্রিয়েটিভ রাইটিং। ননীগোপাল দেবনাথের লেখা সুব্রত কুমার দাসের কর্মযজ্ঞের একটি বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় যা পাঠককে আকৃষ্ট করবে। ড. ফজলুল হক সৈকতের লেখাটিও সুন্দর। লেখক বাদল ঘোষ প্রবাসের পটভূমিতে সুব্রতকে দেখেছেন – পটভূমি অনুযায়ী লেখাটি আকর্ষণীয়। লেখক মৌসুম মঞ্জুর সুব্রতর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু। ওর লেখাটি চমৎকার স্মৃতিজাগানিয়া। লেখক রেজা ঘটক লেখক সুব্রতর লেখা কয়েকটি বই নিয়ে সুন্দর ও সমৃদ্ধ আলোচনা করেছেন। মহাভারতে ওর পছন্দের চরিত্র হিসেবে পাই কর্ণ এবং অভিমন্যুকে। ওদের সঙ্গে ভবিষ্যতে আলাপের আশা রাখি দ্রৌপদী, বিকর্ণ এবং একলব্য চরিত্র বিষয়ে।

সুমন সরদারের লেখা থেকে জানতে পারি কানাডীয় সাহিত্যকে আদর করে ক্যানলিট নামে অভিহিত করা হয়। কাজী রাফির সংক্ষিপ্ত লেখাটি সুন্দর হয়েছে। লেখক প্রবীর বিকাশ সরকারের সঙ্গে সুব্রত দীর্ঘকালের বন্ধুত্ব – লেখালেখির সূত্র ধরে ওদের চির বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। দেলওয়ার এলাহীর লেখায় প্রকৃত সোনার বাংলায় অসম্প্রদায়িক রূপের কথা প্রকাশ পেয়েছে। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে হরিশংকর জলদাস পরম্পরায় সুব্রত কুমার দাস। জেনেছি সুব্রত রচিত চমৎকার গ্রন্থ রবীন্দ্রনাথ: কম জানা সম্পর্কে। আরও জানা যায় দার্শনিক ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন সম্পর্কে। আমরা স্কুলের উচু ক্লাসে পড়া অবস্থায় ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের নাম শুনতে পাই ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে। দেলওয়ারের লেখা থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে নতুন একটি তথ্য জানতে পেরে অনেকেই হতবাক হবেন। নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথ ১৯১৪ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত একটি যোগ্য নামও পান নাই নোবেল কমিটির কাছে পাঠানোর জন্য। সুব্রত কুমার দাস একজন পারিবারিক ও আন্তরিক মানুষ –এটি জানতে পাই চঞ্চল শাহরিয়ারের লেখা থেকে। অসীম ভৌমিকের লেখা থেকে বোঝা যায় একজন স্বপ্নবাজ পুরুষ সুব্রত সম্পর্কে। লেখক রতন সাহার অনুভূতি সর্বজন পর্যায়ের।

মাসুদ রানার লেখাটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ওর লেখাটি পড়ে বুঝতে পারি সুব্রত শুধু লেখক কিংবা গবেষক নন, ভিন্ন ধরনের আবিষ্কারকও বটে। কীভাবে ৩৫০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ছোট কলকাতা নামে অভিহিত সমৃদ্ধশালী কোড়কদী গ্রামকে নতুনভাবে আবিষ্কার করে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সুব্রত – তা ফুটে উঠেছে এই কলমে। আনুষঙ্গিক আরো জানা যায় জ্যোতি বসু এবং ওর স্ত্রীর কথা। প্রসঙ্গত উল্লেখ করছি বারুদীতে লোকনাথ বাবার আশ্রম দেখতে গিয়ে দেড় দু মাইল দূরবর্তী জ্যোতি বসুর পৈতৃক বাড়িটি অনেকের মতো আমিও দেখে এসেছি। তাসমিনা খানের লেখায় পাই মানবিক ও সফল সাহিত্য-উদ্যোক্তা সুব্রতকে। সুব্রত নিজেই নিজের তুলনা – লিখেছেন দেবাঞ্জনা মুখার্জি ভৌমিক। আসলেই তাই। লেখক গড়ার কারিগর হওয়া অনেক কঠিন হলেও হতে পেরেছেন সুব্রত – এই বর্ণনা পাওয়া যায় চয়ন দাসের লেখায়। লেখক গুরুপ্রসাদ দেবাশীষ আলোচনা প্রসঙ্গে ব্যবহার করেছেন ‘আলোর দিশারী’ শব্দবন্ধ। যথার্থ শব্দ চয়ন।

লেখক জাকারিয়া মুহাম্মদ ময়ীন উদ্দিন সুব্রত কুমার দাসকে সম্রাট রূপে অভিহিত করেছেন। সুব্রত অদূর ভবিষ্যতে তা হওয়ার যোগ্যতা অবশ্যই রাখেন। সুব্রত একজন প্রকৃত গুণী। জাকারিয়া একজন সম্রাটের উক্তিকে সামনে এনেছেন। এ সম্পর্কে আমি সামান্য দ্বিমত পোষণ করি – উক্তিটি করেছিলেন জুলিয়াস সিজার। নেপোলিয়ন করেছিলেন কি না তা কোথাও খুঁজে পাইনি। বুঝতে পারি যদি ভুল হয়ে থাকে তা হয়েছে অনবধানবশত। সালমা মুক্তা সুব্রত দাসের রুচিশীলতার পরিচয় সম্পর্কে সুন্দরভাবে লিখে উপস্থাপন করেছেন। এই প্রসঙ্গে সুব্রত স্ত্রীর নীলিমা দত্ত এবং কন্যা ব্রতীর কথা যথাযথভাবে উঠে এসেছে। অপরের লেখা বিষয়ে সুব্রত একজন সত্যিকারের সাহায্যকারী – এমন বর্ণনা পাওয়া যায় মহিবুল আলমের লেখা পড়ে। একই পরিচয় পাওয়া যায় মম কাজীর লেখা থেকেও। ওদের লেখা থেকে জানতে পারি টরন্টো শহরের সুব্রত প্রতিষ্ঠা করেছেন বাংলা ও কানাডীয় সাহিত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন।

আলোচ্য গ্রন্থে প্রত্যক্ষ ছাত্র-ছাত্রীদের চোখে পর্বে লিখেছেন তরুণ কান্তি ঘোষ, ড. নাফিজ আহমদ, আয়শা আখতার, ফজলে রাব্বি, সাহস মোস্তাফিজ, অজয় কুমার মৈত্র, সোহেল মাহমুদ, নাদিয়া পারভীন জুথী এবং সেলিনা আক্তার। তারা প্রত্যেকেই তাদের প্রিয় শিক্ষককে যে যেভাবে দেখেছেন সুন্দর করে বর্ণনা করেছেন। এসব লেখা থেকে সুব্রত কুমার দাসকে গভীরভাবে জানা ও চেনা যায়।

সুব্রত কুমার রচিত গ্রন্থগুলো সম্পর্কে একাধিক লেখক আলোকপাত করেছেন। শেখর কুমার সান্যাল ও রেখা পাঠক সুব্রত রচিত শ্রীচৈতন্যদেব বই নিয়ে আলোকপাত করেছেন। লেখা দুটি চমৎকার – মূল বই পাঠে আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।

কাজী রাফি, সুজিত কুসুম পাল, সৈকত রুশদী, বরুণ কুমার বিশ্বাস এবং অতনু দাশগুপ্ত সুব্রত রচিত কানাডীয় সাহিত্য গ্রন্থ বিষয়ে আকর্ষণীয় ও সমৃদ্ধ আলোচনা করছেন। অনেক কিছু জানা যায় কানাডার সাহিত্য নিয়ে সুব্রতর গবেষণা  সম্পর্কে। তেমনি রবীন্দ্রনাথ: কম-জানা, অজানা গ্রন্থ সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করেছেন জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ, নুরুল আনোয়ার, প্রবীর বিকাশ সরকার এবং রেশমা মজুমদার শম্পা। বইয়ে উল্লিখিত হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলার বিষয়টি অনেকের কাছে নতুন মনে হবে। বইটি পড়তে আগ্রহ বাড়িয়ে দেবে। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে সারা জীবন পড়লেও তিনি কম-জানা, অজানাই হয়ে থাকবেন। নজরুল-বীক্ষা বইটি নিয়ে আলোচনা করেছেন মাত্র একজন রাজিউল হাসান। প্রয়োজনে অন্যদিকে লেখা কমিয়ে এদিকে আকর্ষণ বাড়ালে ভালো হতো বলে মনে করি। এই লেখার সূত্র ধরে অনেক কিছু জানতে পারি। বিশেষ করে নজরুলের বিদেশী সাহিত্য পাঠ সম্পর্কে পারদর্শীতার কথা।

জানা যায় নজরুল ভালো দাবা খেলতেন। প্রসঙ্গত বলছি ১৯৭২ সালে কাজী নজরুল ইসলামকে ঢাকায় নিয়ে আসা হলে ধানমন্ডির একটি বাসায় অবস্থান করতে শুরু করেন কবি। তখন কবি নজরুলকে দেখার সুযোগ দেয়া হলে আমিও কবিকে সামনাসামনি দেখার সুযোগ পাইও। আমি যেদিন যাই, তখন নজরুল সংগীত হচ্ছিল। একের পর এক গান চলছিল। কবি বসে ছিলেন বিছানায় আর মাথা দোলাচ্ছিলেন। সেই স্বাস্থ্য বা বাবরি চুল ছিল না। মনে হলেই শিহরণ হয়। মনে হয় আমি সৌভাগ্যবান কারণ কবিকে সামনাসামনি দেখেছি। সুব্রতর মূল বইটা আমাকে পড়তেই হবে।

উৎস থেকে পরবাস সুব্রত কুমার দাসের একটি সাক্ষাৎকার-মূলক গ্রন্থ। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন দেবাঞ্জনা মুখার্জি ভৌমিক। গ্রন্থটি নিয়ে লিখেছেন সামিনা চৌধুরী, শেখর ই গোমেজ,  রোকসানা পারভীন এবং সুশীল কুমার পোদ্দার। বইটি পড়লে বিস্তারিত জানা যাবে সুব্রত বৈচিত্র্যময় জীবন কাহিনী। সুব্রত রচিত একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ আমার মহাভারত। সুন্দর ও গঠনমূলক আলোচনা করেছেন নৃপেন্দ্রলাল দাস। একই লেখক আলোচনা করেছেন সুব্রত রচিত রবীন্দ্রনাথ ও মহাভারত বইটি নিয়েও। লেখাটিও সুন্দর ও গঠনমূল। বাংলা কথাসাহিত্য: যাদুবাস্তবতা এবং অন্যান্য বই নিয়ে লিখেছেন মনিরুল ইসলাম ও কাজী শাহজাহান। অন্যান্য বিষয়ে ধারণা তৈরি হলেও যাদুবাস্তবতা বিষয়টি আমার কাছে পরিষ্কার হয়নি। বুঝতে পারি এটি পরিষ্কার করার জন্য মূল বই ও প্রাসঙ্গিক গ্রন্থ পড়তে হবে।

সুব্রত রচিত অন্তর্বাহ উপন্যাস নিয়ে লিখেছেন বরুণ কুমার বিশ্বাস এবং তাসমিনা খান। ধারণা করা যায় গ্রন্থটি একটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস – সরল জীবনগাঁথা। এই গ্রন্থের প্রধান চরিত্র অভিমন্যু দাস। অভি নিজেই সুব্রত কুমার দাস স্বয়ং। মূল বইটি পড়ার আগ্রহ বোধ করছি।

হীরক জয়ন্তী গ্রন্থে দুটি সাক্ষাৎকার রয়েছে – নিয়েছেন অতনু দাশগুপ্ত। এই দুটি থেকে প্রবাসী সন্তানদের অনেক কিছু জানার আছে। এগুলো থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাংলা ভাষা শিখতে ও জানতে আগ্রহী হবেন এবং আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে সক্ষম হবেন। এছাড়াও জানা যায় বাংলাদেশি নভেলস ওয়েবসাইট বিষয়ে। জান্নাতুল নাইম সাইটটি নিয়ে লিখেছেন। সুব্রত কুমার দাস প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট বিষয়ে জেনে সবাই উপকৃত হবেন। লেখাটি চমৎকার হয়েছে।

পরিশেষে বলা যায় গ্রন্থটি সর্বাঙ্গিকভাবে সুন্দর। কিছু স্বাভাবিক অপূর্ণতা আছে। আমিও সামান্য আলোকপাত করলাম। সূচি বিন্যাসে লেখকের নাম আগে ছাপা হলে পড়তে সুবিধা হতো। বইয়ের প্রচ্ছদ আকর্ষণীয় এবং আধুনিক। প্রচ্ছদে সুব্রতর রঙিন পাঞ্জাবি পরা ছবি থাকলে ভালো হতো বলে মনে করি।