কানাডা ও ইংরেজি

পূর্বাশা চৌধুরী

যেকোন দেশে অভিবাসনের ক্ষেত্রে সে দেশের ভাষা জানাটা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কানাডার অভিবাসন প্রক্রিয়াও তার ব্যাতিক্রম নয়। আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কানাডার সমাজে মিশে যাওয়া পর্যন্ত, প্রতিটি ধাপে ভাষার দক্ষতা গুরুত্বপূর্ণ। যদিও কানাডার দাপ্তরিক ভাষা দুটো – ইংরেজি এবং ফ্রেঞ্চ; তবে কুইবেক প্রদেশ ছাড়া বাকি সব প্রদেশেই ইংরেজির রাজত্ব। তাই ইংরেজি হোক বা ফ্রেঞ্চ, প্রতিটি প্রদেশেই ভাষা দক্ষতা অর্জনের জন্য কানাডীয় সরকারসহ বিভিন্ন সেটলমেন্ট  প্রতিস্থানগুলো বিনামূল্যে সহায়তার হাত বাড়িয়ে রেখেছে এদেশের নতুন অভিবাসীদের জন্য। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নতুন অভিবাসীরা প্রয়োজনীয় ও সময়উপযোগী তথ্যের অভাবে এই সুযোগটি নিতে ব্যর্থ হন। যেহেতু আমরা বাংলাদেশিরা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি, তাই চেষ্টা করবো এই লেখাটির মাধ্যমে প্রবাসী কানাডিয়ানদের ইংরেজি ভাষা শেখার প্রয়োজনীয়তা এবং সরকারি ও বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ব্যাখ্যা প্রদান করতে। পাশাপাশি আলোকপাত করবো ভাষা শিক্ষায় বাংলাদেশী প্রবাসীদের ভূমিকা এবং তারা যে অসুবিধাগুলির সম্মুখীন হন সে বিষয়গুলো নিয়েও।

চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা

কানাডার অধিকাংশ অঞ্চলেই ইংরেজি ভাষা প্রধান যোগাযোগ মাধ্যম। নতুন অভিবাসীরা স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে, বিভিন্ন জরুরি এবং দৈনন্দিন সেবার ক্ষেত্রে এবং সামাজিক ইন্টিগ্রেশন ত্বরান্বিত করতে ইংরেজি ভাষার দক্ষতার উপর নির্ভর করেন।একজন নতুন অভিবাসী যিনি ইংরেজিতে ততটা দক্ষ নন, তার জন্য স্থানীয় পরিষেবাগুলি, যেমন স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, ব্যাংকিং, দোকানপাট কিংবা কর্মস্থলের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়।

চাকরির ক্ষেত্রে তো ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অপরিহার্য। যেকোনো সেক্টরই কাজ পেতে ইংরেজি জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার যার ইংরেজিতে ভাল দখল আছে, তার জন্য দ্রুত কাজের সুযোগ পেতে সুবিধা হয় তাছাড়া সহকর্মীদের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে বেগ পেতে হয়না।

কানাডার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ ইংরেজি মাধ্যমের। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পাঠ্যক্রমও প্রধানত ইংরেজিতে। অভিভাবকদের জন্য স্কুল এবং কলেজের সাথে যোগাযোগ রাখা এবং সন্তানদের শিক্ষাগত অগ্রগতির উপর নজর রাখার জন্যও ইংরেজি ভাষার উপর নির্ভরশীল হতে হয়। যে অভিভাবক ইংরেজি ভাষা জানেন না, তার জন্য  সন্তানের স্কুলের সাথে সঠিকভাবে যোগাযোগ করতে এবং সন্তানের শিক্ষাগত উন্নতিতে অংশ নিতে বেশ বেগ পেতেই হয়।

সরকারী সুযোগ-সুবিধা:

ভাষাগত প্রতিবন্ধকতাগুলোকে সফলভাবে জয় করতে অভিবাসিরা নিতে পারেন নিম্নোক্ত সুযোগ-সুবিধাগুলো –

শুরুতেই যে নামটি আসে তা হলLanguage Instruction for Newcomers to Canada (LINC)।কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী এবং নাগরিকত্ব (IRCC) বিভাগের অধীনে পরিচালিত বিনামূল্যে ইংরেজি ভাষার কোর্স। কানাডার প্রতিটি শহরেই রয়েছে LINC প্রোগ্রামের সুবিধা। শুধুমাত্র একটি প্রাথমিক মাননির্ধারণ পরিক্ষার (CLB) মাধ্যমেই ভর্তি হওয়া যায় এই কোর্সে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো নতুন অভিবাসীদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের কানাডিয়ান সমাজে সুষ্ঠুভাবে অন্তর্ভুক্ত করতে সহায়তা করা। এর মাধ্যমে প্রবাসীরা কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং সামাজিক পরিবেশে নিজেদের মানিয়ে নিতে সক্ষম হন।  স্তরভিত্তিক এই প্রোগ্রামটি বিভিন্ন স্তরের ইংরেজি ভাষা শিক্ষা কোর্স প্রদান করে, যা শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক থেকে উন্নত স্তর পর্যন্ত ইংরেজি শিখতে সহায়তা করে। এটি শিক্ষার্থীদের মৌখিক এবং লিখিত যোগাযোগ দক্ষতা উন্নত করার উপর গুরুত্ব দেয়। এবং এতে কানাডার কর্মসংস্থান সম্পর্কিত ভাষা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষাদান করা হয়, যা প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সহায়ক। ক্লাসগুলি পার্ট-টাইম এবং ফুল-টাইম উভয় ফর্ম্যাটে উপলব্ধ, যা শিক্ষার্থীদের তাদের সময়সূচি অনুযায়ী ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে সহায়তা করে। অনেক LINC কোর্স অনলাইনে পাওয়া যায়, যা শিক্ষার্থীদের নিজেদের সুবিধামতো সময়ে এবং স্থান থেকে ক্লাসে অংশ নিতে সুবিধা দেয়। এছাড়াও প্রোগ্রামটি শিক্ষার্থীদের  চাইল্ড কেয়ার, ট্রান্সপোর্টেশন সহ অতিরিক্ত সহায়তাও  প্রদান করে থাকে।

এরপরে যার নাম আসে-Enhanced Language Training (ELT)। এটি একটি উচ্চতর স্তরের ১৪ সপ্তাহের নির্দিষ্ট মেয়াদী ভাষা শিক্ষা প্রোগ্রাম যা বিশেষত পেশাদারদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই প্রোগ্রামটিও বিনামুল্যে কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী এবং নাগরিকত্ব (IRCC) বিভাগের অধীনে পরিচালিত হয়। এটি মূলত পেশাদার এবং উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন অভিবাসীদের জন্য ডিজাইন করা,  যারা কানাডার কর্মক্ষেত্রে সফল হতে চান। ELT প্রোগ্রামটি নতুন অভিবাসীদের পেশাগত জীবনে ভাষাগত এবং সংস্কৃতিগত বাধা অতিক্রম করতে সহায়তা করে।  প্রোগ্রামটির মূল লক্ষ্য হলো নতুন অভিবাসীদের পেশাগত ভাষা দক্ষতা উন্নত করা, যা তাদের কর্মক্ষেত্রে সফল হতে সহায়ক। প্রবাসীদের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা এবং তাদের পেশাগত অগ্রগতির সুযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে রয়েছে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ELT প্রোগ্রামে রয়েছে বিশেষভাবে তৈরি করা কোর্সগুলো, যা নির্দিষ্ট পেশাগত ক্ষেত্রের উপর ভিত্তি করেই ডিজাইন করা হয় – যেমন, ব্যবসা, প্রযুক্তি, স্বাস্থ্যসেবা, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি। এতে বাস্তবজীবনের কাজের পরিস্থিতি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য শিক্ষাদান করা হয়। ELT প্রোগ্রামটি ইন্টার্নশিপ এবং মেন্টরশিপ এরও  সুযোগ প্রদান করে, যা প্রবাসীদের কানাডিয়ান কর্মক্ষেত্রে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়ক।পারেন, যা তাদের রেজুমেতে একটি শক্তিশালী প্রোফাইল তৈরি করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও এই প্রোগ্রামে বিভিন্ন কর্মশালা এবং ইভেন্টের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিং সুযোগ প্রদান করা হয়।

সরকারের পাশাপাশি রয়েছে সেটলমেন্ট  প্রতিস্থানগুলো। প্রতিটি শহরেই রয়েছে বিভিন্ন স্থানীয় সংস্থা যারা সরকারের সাথে যৌথ প্রযোজনায় পরিচালনা করে আসছে প্রবাসীদের জন্য বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে ভাষা শিক্ষা কোর্স। যেমন – অন্টারিওতেআছে OSLT (Occupation-Specific Language Training) । এই প্রোগ্রামটি সেসব নতুন অভিবাসীদের জন্য ডিজাইন করা যারা নির্দিষ্ট পেশার জন্য ইংরেজি দক্ষতা উন্নত করতে চান। এটি বিভিন্ন পেশার জন্য বিশেষায়িত ভাষা প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকে  যেমন স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা, প্রকৌশল ইত্যাদি। ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে আছে  ELSA (English Language Services for Adults) যা নতুন অভিবাসী এবং শরণার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এখানে প্রাথমিক থেকে উন্নত স্তর পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের ক্লাস পাওয়া যায়। বর্তমানে এই প্রোগ্রামটি LINC প্রোগ্রামের সাথে একীভূত হয়েছে।  আলবার্টার বিভিন্ন কলেজ ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে ESL (English as a Second Language) প্রোগ্রামটি, যা নতুন অভিবাসীদের ইংরেজি ভাষার দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করে। ম্যানিটোবাতে Adult Language Training (ALT) প্রোগ্রামটিও নতুন অভিবাসীদের জন্য বিনামূল্যে ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং তাদের চাকরির জন্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করে। যদিও কুইবেকে প্রধান ভাষা ফরাসি, তবে ইংরেজি ভাষা শেখার জন্যও বিভিন্ন প্রোগ্রাম রয়েছে। নতুন অভিবাসীরা সেখানে ফরাসি ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই  দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পান। এইসব প্রোগ্রাম নতুন অভিবাসীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী, কারণ তারা শুধু ভাষা দক্ষতা নয়, বরং নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে ও পেশাগত জীবনে সফল হতে সহায়তা করে।

বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা:

বেসরকারিসুযোগ-সুবিধার কথা বলতে গেলে আসে  প্রাইভেট টিউটর এবং ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুলগুলোর নাম। প্রাইভেট টিউটররা শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী, তাদের দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে  সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করে শিক্ষা প্রদান করেন, যা শিক্ষার্থীদের দ্রুত উন্নতি করতে সহায়ক। প্রাইভেট টিউটরের সাথে শিক্ষার্থীরা তাদের সুবিধামতো সময়ে এবং স্থানে ক্লাস করতে পারেন, যা বিশেষত কর্মরত প্রবাসীদের জন্য সুবিধাজনক। অনেক প্রাইভেট টিউটর অনলাইনেও ক্লাস পরিচালনা করেন, যা শিক্ষার্থীদের জন্য হয় আরও সুবিধাজনক। আবার  তারা IELTS, TOEFL, এবং অন্যান্য ভাষা পরীক্ষার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি প্রদান করেন যা পেশাগত লক্ষ্য অর্জনেও ভূমিকা রাখে। উদাহরণসরূপ বলা জেতে পারে টরন্টোর লিঙ্কন ইংলিশ স্কুল এবং ভ্যাঙ্কুভারের ইএলএস কানাডার কথা।

অসুবিধা:

অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকলে ও সব প্রবাসীর জন্যই যে তা সহজলভ্য হয় সেটা কিন্তু নয়। অনেককেই নানাধরনের অসুবিধারও মোকাবিলা করতে হয়। শুরুতে অনেক প্রবাসীই বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বাধার সম্মুখীন হন নতুন সংস্কৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে। স্থানীয়দের সাথে সহজে মিশতে না পারার ফলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার সুযোগ কমে যায়।  আবার অনেকে আছেন তাদের নিজস্ব কমিউনিটি থেকে দূরে থাকার কারণে সামাজিক সমর্থনের অভাব অনুভব করেন, যা তাদের প্রেরণা কমিয়ে দেয়। পরিসংখানে দেখা যায় নতুন প্রবাসীরা প্রায়ই কানাডিয়ান সমাজের সংস্কৃতিগত পার্থক্যের কারণে শক অনুভব করেন, যা  তাদের ইংরেজি শেখার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে থাকে।  অনেক সময় তারা ইংরেজি ভাষার যোগাযোগ শৈলী এবং টোন বুঝতে অসুবিধা বোধ করেন, যা তাদের জন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া বিভিন্ন সংস্কৃতিতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যবহারের পার্থক্য নতুন প্রবাসীদের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে এবং ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়। আবার এক নতুন অভিবাসী যিনি ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিকভাবে রক্ষণশীল, তিনি কানাডার মুক্ত এবং প্রগতিশীল সমাজে মানিয়ে নিতে এবং ইংরেজি শিখতে অসুবিধা বোধ করেন। প্রাইভেট টিউটর বা ল্যাঙ্গুয়েজ স্কুলের উচ্চ ফি অনেকের জন্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। নতুন প্রবাসীরা তাদের কর্মজীবন এবং পারিবারিক জীবনের সাথে ক্লাসের সময় মেলাতে সমস্যায় পড়েন বলে একটা সময়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভাষা শিক্ষার ক্লাস গুলোকেই বাদ দিয়ে দেন। তাছাড়া প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা তো আছেই। অনেক প্রবাসী আছেন যারা আধুনিক প্রযুক্তি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে ততটা অভ্যস্ত নন। তাদের সেই ডিজিটাল দক্ষতার অভাব ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসেবে কাজ করে থাকে। কারণ  শুরুতেই তারা অনলাইন ভাষা শেখার প্ল্যাটফর্মে লগইন, নিবন্ধন, এবং ব্যবহার করতে সমস্যায় পড়ে থাকেন। তাছাড়া ভাষা শিক্ষার জন্য ব্যবহার করা বিভিন্ন ডিজিটাল টুলস যেমন ভিডিও কনফারেন্সিং সফটওয়্যার, ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, এবং অনলাইন ডিকশনারি ব্যবহার করার প্রয়োজনে দক্ষতার অভাব থাকলে শেখার প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে। ডিজিটাল মাধ্যমগুলোতে অনেক সময় নিজেই নিজেকে পরিচালনা করতে হয়। যারা ডিজিটাল দক্ষতায় পিছিয়ে, তারা ওই স্ব-নির্দেশিত শেখার পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করতে সমস্যায় পড়েন। যার ফলে হতাশ হয়ে নিজেদেরকেই সরিয়ে নেন সে পথ থেকে।

নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ, নতুন ভাষার সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে গেলে কম বেশি সবাই কেই কিছু না কিছু বাঁধার মুখমুখি হতে হয়। তাই বলে থেমে থাকা বা পিছিয়ে যাওয়া কোন সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারেনা। সেক্ষেত্রে সঠিক ও সময়োপযোগী সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের লক্ষ্যে কিছু কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণই এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত অর্জন। যেমন স্পষ্ট ও অর্জনযোগ্য ভাষা শিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করে তা নিয়মিত পর্যালোচনা করা। এক্ষেত্রে কিন্তু আমাদের  বাংলাদেশী প্রবাসীদের ভূমিকাও কম প্রশংসনীয় নয়। বাংলাদেশীরা কমিউনিটির বিভিন্ন সাপোর্ট গ্রুপ এবং কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনা করেন যেখানে নতুন প্রবাসীদের ইংরেজি শেখার পরিবেশ এবং পরামর্শ প্রদান করা হয়।এই কমিউনিটি সংগঠনগুলি নিয়মিত ভাষা শিক্ষা কর্মশালা এবং ক্লাস আয়োজন করে।অনেক বাংলাদেশী প্রবাসী নিজেদের উদ্যোগেও ভাষা শিক্ষা ক্লাস পরিচালনা করেন এবং নতুনদের ইংরেজি শেখাতে সাহায্য করেন।প্রবাসীরা নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে নতুন প্রবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহায়তা প্রদান করে থাকেন। তারা বিভিন্ন কমিউনিটি ইভেন্টে এবং সামাজিক মাধ্যমে সফল প্রবাসীদের গল্প শেয়ার করেন যা নতুন প্রবাসীদের অনুপ্রাণিত করে।  

পূর্বাশা চৌধুরী- LINC Instructor