কানাডার রাজনীতি নিয়ে বেলা-অঞ্জন সংলাপ
প্রায় প্রতি সপ্তাহের মতো এবারও তারা ঘড়ির কাটা গুনে তাদের পছন্দের জায়গাটায় এসে বসলো। স্কারবোরো ব্লাফসকে পেছনে রেখে এই জায়গাটা দারুণ সুন্দর – সামনে বয়ে গেছে অন্টারিও লেক, আকাশে উড়ছে গাংচিল, বাতাসে বসন্তের গন্ধ। প্রকৃতির সান্নিধ্যে তারা কত কিছু নিয়েই কথা বলে। প্রেম, ভালোবাসার প্যানপ্যানানি বিষয় নয়, বা নয় কে কাকে সারা সপ্তাহ না দেখে মিস করছে। মিস করলেও মুখ ফুটে সেসব বলতে দুজনেরই বাধে। হাজার হলেও কিশোর কিশোরী তো নয়। তবে কথা শুরু হলে কথার খৈ ফুটতে থাকে বেলার মুখে। অঞ্জন বেশির ভাগ সময় শুনেই যায়। যদি মনে করে, কোনো বিষয়ে বেলার হাইপোথেসিসে একটু গলা না মিলিয়ে বিপরীত দিকটা তুলে ধরবে, তখন গলার স্বর যতটা সম্ভব নীচে নামিয়ে বলতে শুরু করে। বেলার একটা ব্যাপার, অঞ্জন যখন বলতে থাকে, তখন ও বেশ মজা করে শোনে। এবার দেখা করার বিষয়টা যদিও অন্য অনেকবারের মতোই, কিন্তু আলোচনার বিষয়টা একেবারেই অন্যরকম। বেলা লক্ষ করলো, অঞ্জন কেমন একটু আনমনা হয়ে আছে – এখানে আছে বটে , কিন্তু নেইও আবার। ওর মন পড়ে আছে যেন অন্য কোথাও। বেলা ঠিক জুৎ করে কথা বলতে পারছে না। বেলার দিকে অঞ্জনের মনোযোগ যেন আজকে একেবারেই নেই। বেলা অঞ্জনের কাছে এবার সরাসরি জানতে চাইলো, ‘কী হলো বোলো তো, আমার কথা যে কিছুতেই শুনছো না।‘ দুজন একটা বেঞ্চিতে মুখোমুখি বসে, প্রতিবার যেমন বসে। অঞ্জন এবার আস্তে করে বললো, আসলে একটি ব্যাপার নিয়ে কদিন ধরেই ভাবছি, কিন্তু তোমাকে বলা হয়নি, কারণ এ বিষয়টা নিয়ে আমরা সাধারণত আলাপ করি না। তোমার কবিতার প্রতি ঝোঁক। বা সাহিত্য, পেইন্টিং এগুলো নিয়ে তুমি সবসময় সরগরম থাকো। আর আমি তো আছিই কাজে অকাজে। তবে ভাবছিলাম, আজকে প্রতিদিনের নিয়ম ভেঙে তোমার সাথে এ বিষয়টা শেয়ার করবো। যদি তুমি শুনতে চাও। বেলার খুব আগ্রহ হলো – এমন কী বিষয় অঞ্জন বলতে চায় নতুন করে! বেলা দুষ্টুমি করে বললো, নতুন করে প্রেমের প্রস্তাব দেবে না তো? ওর দুষ্টুমিটা বুঝতে অঞ্জনের বাকি রইলো না। বললো, দিতেও তো পারি। বেলার আর তর সইছে না। বললো, হেয়ালি না করে বলেই ফেলো। অঞ্জন বেলাকে জিজ্ঞেস করলো, তোমার কি মনে আছে, বলেছিলাম, আমার একটা ইনভেস্টমেন্ট প্রপার্টি আছে। অর্থাৎ যেখানে থাকি, সেটি ছাড়াও আরেকটা ছোট বাড়ি আমার আছে, আপাতত ভাড়া দিয়ে রেখেছি। ভাবছিলাম, আর মর্টগেজ টানতে পারছি না, বাড়িটা বিক্রি করেই দেব। কিন্তু আমাদের প্রাণপ্রিয় সরকার ওঁৎ পেতে আছে, আমার বিক্রির টাকায় ভাগ বসাতে। বেলা বেশ কৌতূহলী এবার। অঞ্জনকে কখনও এরকম বিরক্ত দেখেনি। ও নর্মালী বেশ শান্ত। খুব একটা কথা বলে না প্রয়োজন ছাড়া। কিন্তু ওকে যেন এখন কথায় পেয়ে বসলো – মনোযোগী শ্রোতা পেলে যা হয়।
অঞ্জন বলতে থাকলো, এইতো জুনের কোনো এক সময় থেকে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স বাড়িয়ে দিলো সরকার। বেলা বললো, তুমি এতো খবর কোথায় পাও। অঞ্জন হেয়ালি করতে ছাড়লো না, আরে বাবা, আই নিড টু পুট ফুড অন দ্য টেবল। তো এইজন্য এসবের খবর রাখতে হয়। তোমার মতো সুকুমার প্রবৃত্তির চর্চা নিয়ে দিন কাটিয়ে দিতে আমারও ভালো লাগে। কিন্তু শুধু তা করলে তো চলে না। শোনো, এখন বাড়িটা তো কিনেছিলাম কিছুটা কম দামে। ভাবছিলাম বিক্রি করে কিছু টাকা রিটায়ারমেন্টের জন্য রেখে দেবো। কিন্তু সরকার সেটা মনে হয় আর করতে দিচ্ছে না। বলছে, লাভের পরিমাণ দুশো পঞ্চাশ হাজারের বেশি হয়ে গেলে ট্যাক্স বসাবে প্রায় ৬৭ শতাংশ। ভাবতে পারো , অতিরিক্ত প্রতি এক ডলার লাভের টাকা থেকে ৬৭ সেন্টস কেটে নেবে, তাহলে আর থাকলো কী। বেলা এবার না পারতে বলেই বসলো, সব সময় তুমি সরকারের দোষ দাও, তাও ফেডারেল সরকারের। অঞ্জন ভাবলো, ওকে কানাডার পলিটিকাল সিস্টেমের গোড়া থেকেই শুরু করতে হবে। না হলে বেলার মাথায় চেপে বসবে, ও কেবল ফেডারেল সরকারের দোষটাই আগে দেখে।
অঞ্জন বললো, শোনো, এই যে ট্যাক্সটার ব্যাপারটা বললাম, এটা ফেডারেল সরকারের জুরিসডিকশন। জানো তো, কানাডায় তিন লেভেলের সরকার আছে – মিউনিসিপাল, প্রভিন্সিয়াল, ফেডারেল। মিউনিসিপাল সরকারের প্রধান হচ্ছে মেয়র এবং তার অধীনে কাউন্সিলররা। আর প্রভিন্সিয়াল সরকারের প্রধান হচ্ছে প্রিমিয়ার বা ভারতে যেমন বলে মুখ্যমন্ত্রী, আর তার অধীনে হচ্ছে কেবিনেট বা মন্ত্রিপরিষদ। ফেডারেল সরকারের প্রধান হচ্ছে প্রাইম মিনিস্টার, আমাদের সুদর্শন জাস্টিন ট্রুডো, যার প্রতি তোমারও কিছুটা ক্র্যাশ আছে। অঞ্জন সুযোগ পেয়ে রসিকতা করতে ছাড়লো না। আর তার অধীনে যথারীতি মন্ত্রিপরিষদ বিভিন্ন পোর্টফোলিও নিয়ে। বেলা এতোক্ষণ পর এবার একটু মুচকি হাসলো। আজকে অঞ্জনের কথাগুলো শুনতে বেশ ভালোই লাগছিলো ওর। ভাবছে, কানাডার পলিটিকাল সিস্টেম নিয়ে ফ্রি-তে একটা ক্র্যাশ কোর্স হয়ে যাচ্ছে, মন্দ কী। পলিটিক্সের ব্যাপারটা ওর কাছে বড্ডো গোলমেলে মনে হয়। ফেডারেল কনজারভেটিভ পার্টিকে প্রভিন্সিয়াল প্রোগ্রেসিভ কনজারভেটিভ পার্টির সাথে ও বার বার গুলিয়ে ফেলে। দুটো যে আলাদা দল, এই বিষয়টা অনেকের মতো ও-ও বোঝে না। মতাদর্শগত ঐক্য যে একেবারে নেই, তা নয়, কিন্তু ফেডারেল কনজারভেটিভ প্রভিন্সিয়ালের দলের উপর খবরদারি করবার এখতিয়ার নেই। অন্টারিওর মতো ক্যালগারিতেও তাই। ওখানকার কনজারভেটিভ মতাদর্শের দল হচ্ছে ইউনাইটেড কনজারভেটিভ পার্টি বা সংক্ষেপে ইউসিপি।
অঞ্জন এবার আগের কথাতেই ফিরে এলো। বেলাকে কৃত্রিম অনুশাসনের সুরে বললো, আজকে চুপচাপ আমার কথা শোনো, আখেরে লাভ হবে। বেলাও ছাড়ে না। কী লাভ শুনি। আমাকে কি রোমান্টিক কবিতা শোনাবে। অঞ্জন না হেসে পারলো না। কবিতা তো তোমার দখলে। আমি কি আর কবি! বেলার মনোযোগ ধরে রাখবার জন্য অঞ্জন মিথ্যে করে বললো – শোনাবো, যদি আজকে আমাকে আমাকে কথাগুলো বলতে দাও। টেড টক্ দেবে নাকি, প্রকৃতির এই নির্জনে একমাত্র শ্রোতার কাছে। ওয়ান পার্টিসিপেন্ট এট এ টাইম ম্যাডাম – অঞ্জনের সরস উত্তর।
তোমাকে যে কথাটা বলা হয়নি, সেটা হচ্ছে, যদি অন্য বিরোধীদলগুলো এই বিল সাপোর্ট না করতো, তাহলে সরকার পাশ করাতে পারতো না। বেলা বললো, বিরোধী দল মানে? জানো তো, হাউস অফ কমন্সে, যেটাকে আমরা সংসদ বলি, যেখানে এমপি মহোদয়রা আইন প্রণয়ন করেন, ওখানে মূল বিরোধী দল ছাড়াও আরো কয়েকটা আছে। জনগণের ভোটে যারা নির্বাচিত হয়েছে। যেমন এনডিপি বা ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি নামের এই দল ২৫ জন সংসদ নিয়ে এখন সরকারের সাথে সাপ্লাই এন্ড কনফিডেন্স এগ্রিমেন্ট নামে একটা সমঝোতার মধ্যে সরকারকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের এই বিলে ওদের সমর্থন আছে। সেই সাথে শুনেছি, কুইবেক-ভিত্তিক ব্লক কুইবেকোয়া নামের দলটিও সমর্থন দিয়েছে। তাদের আছে ৩২ জনের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য। আর দুটো বা তিনটে নিয়ে আছে কোনোরকমে সলতে জ্বালিয়ে রাখা গ্রীন পার্টি।
তো যা বলছিলাম, এই বিল এবার এখান থেকে সিনেটে যাবে। সিনেট হচ্ছে মনোনীত প্রতিনিধিদের উচ্চ কক্ষ – তবে নামে মাত্র। সার্বভৌম ক্ষমতা হচ্ছে নিম্ন কক্ষের অর্থাৎ হাউস অফ কমন্সের। তো এই বিল সিনেটে যাবে রাবার স্টাম্পের জন্য। ওখান থেকে পাশ হলে তারপর আইনে রূপ নেবে। অবশ্য এরপর চূড়ান্তভাবে অর্ডার ইন কাউন্সিল নামে গভর্নর জেনারেলেরও একটা অনুমতির দরকার হয়।
আসলে বিভিন্ন লেভেলের গভর্নমেন্ট বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করে। যেমন ধরো, বাড়ি করবে, অনুমতি লাগবে – চলে যাও সিটি হলে, মিউনিসিপাল সরকারের কাছে। এই পারমিট নিয়ে লোকজনের বা বিল্ডারদের ভোগান্তির শেষ নেই। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দুদিনের কাজ করতে লাগিয়ে দেয় ছয়মাস। তাই সংসদের বিরোধী নেতা পিয়ের পলিয়েভের মতো আমিও বলি, সুতোর নাটাই এক জায়গাতেই। ফেডারেল সরকারকে ঠিক করো, বাকিরা নিয়মের মধ্যে চলে আসবে। যেমন ফেডারেল সরকার হাউজিং প্রোগ্রামের জন্য বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে প্রভিন্স এবং মিউনিসিপালিটিকে, কিন্তু সেই টাকা কোন খাতে খরচ করছে, সেটা উপরের লেভেল থেকে সেভাবে মনিটর করছে না। তাই নিচু স্তরের সরকারগুলো দীর্ঘদিন বাড়িঘর নির্মাণ নিয়ে সেভাবে এগোয়নি। এখন সরকার থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে, একটা নির্দিষ্ট পরিমান বাড়ি ঘরের অনুমোদন না দেয়া হলে ফান্ডিং দেয়া হবে না। এই চাপ এসে পড়ছে প্রভিন্সের উপর, আর প্রভিন্স চাপ দিচ্ছে মিউনিসিপালিটি বা সিটির উপর।
অঞ্জনের মনে হলো, বেলা এখনো হাই তোলা শুরু করেনি। এই ফাঁকে আরেকটু ওকে রাজনীতির অ, আ, ক, খ জানিয়ে দিতে পারলে মন্দ হয় না। অঞ্জন বললো, জানো, কেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী বৃটেনে গেলে রানি বা হালের রাজা চার্লসের সাথে দেখা করে?
বেলা বললো, তাই তো, কেন বোলো তো। তবে দেখতে আমার বেশ ভালো লাগে। রানির কাছে গেলে রাষ্ট্রনায়করা কেমন বিগলিত হয়ে থাকে। আসলে ব্যাপারটা কী।
আসলে ব্যাপারটা হচ্ছে, প্রোটোকল। কানাডা সাংবিধানিকভাবে রাজতন্ত্র অর্থাৎ রাজা হচ্ছে রাষ্ট্রের প্রধান। খেয়াল করো, সরকারের নয়, রাষ্ট্রের প্রধান, মানে নির্বাহী ক্ষমতা কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের হাতেই – যে পরিষদের সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। বলা হয়, মিনিস্টার্স অফ দ্য ক্রাউন, মানে রাজার কাছে শপথ নিতে হয়। তো ব্রিটেনের রানি বা রাজা তো এখানে থাকে না, তাই রানি বা রাজার প্রনিনিধি হিসেবে থাকেন গভর্নর জেনারেল। আমাদের এখন যিনি আছেন, তার নাম মেরি সাইমন। আরও মজার ব্যাপার, তিনি একজন ন্যাটিভ অর্থাৎ আদিবাসী রমণী। ভারতেও কাকতালীয়ভাবে তাই, প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন আদিবাসী দ্রৌপদী মুর্মু। যাই হোক, রাজা বা রানির প্রনিনিধির কাছে যারা শপথ নিচ্ছেন, সেই মন্ত্রিপরিষদ জবাবদিহি করবে হাউস অফ কমন্সে। আর বিরোধী নেতাকে বলা হয়, লিডার অফ দ্য লয়াল অপজিশন অফ হার ম্যাজেস্টি। তাই সবার জবাবদিহিতা এক জায়গাতেই – সংসদে।
কানাডার অনেকগুলো দলের নাম তো তোমাকে বলেছি। বহুদলীয় গণতন্ত্র এখানে – যদিও বড়ো দুটো দল হচ্ছে লিবারেল পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টি। ওরাই পালাক্রমে এ দেশ শাসন করে আসছে। সামনে দেখো না, সরকার পরিবর্তন হবার যথেষ্ট আলামত দেখা যাচ্ছে। এতদিন তো সুদর্শন ট্রুডোকে দেখে আসছো। এবার তার চেয়ে আরো সুদর্শন প্রাইম মিনিস্টার ইন ওয়েটিং হচ্ছে পিয়ের পলিয়েভ। সংসদের কার্যপ্রণালী দেখতে দারুণ লাগে। কবিতার মতো – কখনও প্রেমের, কখনও বিদ্রোহের। সরকারি দলের এমপিরা যখন বলেন, মনে হয়, সরকারের প্রেমে তারা গদগদ। কিন্তু বিরোধী দল উঠলেই মনে হয়, নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা মাত্র পাঠ করে ঢুকেছে , ‘আমি মহামারী, আমি ভীতি এই ধরিত্রীর’। তবে সংসদে ওরা যে ভীতি সরকারের, এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
আসলে তোমাকে এই দেশটির জন্মের ইতিহাসটা আরেকটু আগে থেকে বললে তোমার বুঝতে সুবিধে হতো। ব্রিটেনের সাথে কানাডার সম্পর্কটা কীভাবে হলো বা কেনই বা হলো।
আসলে কানাডার সরকারের কাঠামো শুরু হয়েছিল ব্রিটিশ পার্লামেন্ট থেকে। এটাকে বলা হয় ব্রিটিশ নর্থ আমেরিকা আইন। সেটা ১৮৬৭ সালের কথা। তবে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন পেতে সময় লেগেছে অনেক বছর। পেয়েছে প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের পর। ১৯২৬ সালে বেলফোর ঘোষণা নামে এক চুক্তির আওতায় কমনওয়েলথের অধীনে ব্রিটিশের উপনিবেশগুলো পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন পেয়ে যায়। যেমন কানাডা এর মধ্যে একটি। তবে মজার ব্যাপার কী জানো? ব্রিটিশদের খবরদারি এতো সহজে বিলুপ্ত হয়নি। খুব বেশি সময় আগে নয়, মাত্র সেই দিন অর্থাৎ ১৯৮২ সালে ব্রিটিশরা কানাডায় তাদের খবরদারি পুরোটা গুটিয়ে নেয়। ভাবতে পারো, পুরো স্বাধীনতা পেতে কত দীর্ঘ সময় কানাডা অপেক্ষা করেছে – ১৮৬৭ সাল থেকে ১৯৮২। তবে একটা বিষয় এখনো রয়ে গেছে। সেটা হচ্ছে শুরুতে যেটি বলেছিলাম, সাংবিধনিক রাজতন্ত্র – কনস্টিটিউশনাল মনার্কি। রানি বা রাজার প্রাতিষ্ঠানিক পদটি খুব সহজেই যাচ্ছে না।
বেলা এবার ঘড়ির দিকে তাকালো। ‘এই যে মশাই, এতো সময় হয়ে গেল তোমার বক বক শুনতে শুনতে। এই জন্যই বলি, মশাই কথা এমনিতে বলে না, শুরু করলে আর থামতে চায় না।‘ বেলার তাড়ায় অঞ্জনের ঘোর কাটলো। আসলে এতো সময় একনাগাড়ে কখনও বলার অভ্যেস তার নেই। পুরোদস্তুর হাঁপিয়ে উঠলো সে। কোনোরকমে নিজেকে উঠিয়ে এবার বেলার পিছু পিছু গাড়ির দিকে রওনা দিলো।