অন্তর্বাহ : স্মৃতি-বাস্তবতার মেলবন্ধন

বরুণ কুমার বিশ্বাস

গল্প বলা ও গল্প শোনার ব্যাপারে এ উপমহাদেশের মানুষের মধ্যে বিশেষ ধরনের মোহ কাজ করে হাজার বছর ধরে। বাঙালিদের মধ্যে এ বিষয়টি আরও প্রবলভাবে কাজ করে; গ্রামীন বাংলার মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কোনো ধরনের আয়োজন ছাড়া গল্পকথকদের কাছে শোনা গল্পগুলো যেন শ্রোতাদেরকাছে হয়ে উঠতো অনবদ্য। স্মৃতি রোমন্থন করে প্রতিনিয়ত খুঁজে পাওয়া নানান টুকরো ঘটনাগুলো যেন জীবন নামক মহাকাব্যের এক একটি পাতা হয়ে ওঠে। অন্যদিকে সময়ের বাস্তবতায় ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে যায় একজন মানুষের ‘হয়ে ওঠা’। স্মৃতি ও বাস্তবতার মাঝখানে থেকে উপলব্ধি করা সময়ের নাম ‘অন্তর্বাহ’; একটি উপন্যাস।

‘হয়ে ওঠা’র বয়ানের ভেতর দিকে ঔপন্যাসিক পাঠককে ভাবিয়েছেন। পাঠককে কখনও কখনও নস্টালজিক হতে বাধ্য করেছেন তাঁর পরিবেশ-প্রতিবেশে লুকিয়ে থাকা কিংবা হারিয়ে যাওয়া নিজেকে নিয়ে। ‘অন্তর্বাহ’ এমনই একটি উপন্যাস। এসবের ভেতর দিয়ে কীভাবে গ্রাম থেকে উঠে আসা মানুষের ‘হয়ে ওঠা’ সম্ভব হয়েছে তা বিবৃত হয়েছে। আর স্মৃতির বিচরণ ক্রমশ পাঠককে নিয়ে যায় যার যার নিজস্ব অতীতের খুব কাছাকাছি।

বাংলা সাহিত্যে উপন্যাসের যে বিশাল সাম্রাজ্য রয়েছে সেখানে ‘অন্তর্বাহ’ অতি সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে। ধারার বিবেচনায় ‘অন্তর্বাহ’ আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসের জোর দাবিদার। প্রাবন্ধিক সুব্রত কুমার দাস-এর প্রথম উপন্যাস এটি। বিশ বছর ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত সুব্রত কুমার দাসের লেখা অধিকাংশ গ্রন্থ হয়েছিল গবেষণা, প্রবন্ধ, অনুবাদ ধারায়। উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অভিমন্যু দাস; যিনি মনেপ্রাণে একজন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীদের প্রিয় মানুষ। এর বাইরে তাঁকে আরও বেশ কয়েকটি পরিচয়ে পরিচিত করা হলে তা খুব বেশি বাড়াবাড়ি হবে না বলে আস্থা রাখি। তবে পাঠকমন কখনও কখনও অভিমন্যু দাসকে একজন প্রচ্ছন্ন দার্শনিক হিসেবে উপস্থিত হতে দেখেছে; যা ভাবনায় ফেলার আগেই পাঠককে সূক্ষ্মভাবে সরিয়ে নিয়েছেন ভিন্ন প্রেক্ষিতে।

উপন্যাসটি মূলত ‘লেখক-চরিত্র’তে অবতীর্ণ অভি’র অতীত-বর্তমান স্মৃতি-বাস্তবতার মেলবন্ধন। শৈশব-কৈশোর-যৌবন তিন পর্যায়ে জীবনবৃত্তের পরিধি বেড়েছে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে। প্রতিনিয়ত যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন ঘটনা। কখনও ঘাত-প্রতিঘাত, কখনওবা নিতান্তই সুখানন্দ, আবার কখনো মানবজীবনের চিরন্তন সত্য হয়ে উঠেছে সে বৃত্তের উপাদান। আবহমান বাংলার শাশ্বত রঙ, রূপ, রসে বড় হওয়া অভি যৌবনে এসে মহানগরীর একটি কলেজে অধ্যাপনা পেশায় নিযুক্ত হন। অভি পেছনে ফিরে ক্রমাগত তাঁর জীবনের গল্পকারদের দেখেন। কিন্তু স্মৃতির পাতায় গল্পগুলো না থাকলেও অনবদ্য হয়ে রয়েছেন গল্পকথকরা। অভি’র আলাকা (আলাউদ্দিন কাকা) ছিলেন তাঁদেরই একজন। পেশায় ছিলেন কর্মকার; যার গল্পবলার ঐন্দ্রজালিক শক্তিতে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গল্প শুনতেন অভি এবং অন্যরা।

গল্পকথকদের অন্যতম ছিলেন তাঁর ইঞ্জিনিয়ার পিশেমশাই। তাঁর কাছেই অভি প্রথম শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়, নীহাররঞ্জন রায়, আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাসগুলোর কাহিনি শুনেছিলেন। পিশেমশাইয়ের কাছে শোনা নীহাররঞ্জন রায়ের ‘কালোভ্রমর’ এর রোমাঞ্চকর কাহিনি শুনে রীতিমত আতংকিত হয়েছিলেন অভি। অভির ধারণা হয় বাঙালি জাতি আসলে গল্প বলায় অত্যন্ত দক্ষ। উপন্যাসে অভি আরেকজন গল্পকারের কথা বলেছেন যার নাম তরুণ; বয়সে দু’তিন ক্লাস ছোট। তার গল্প প্রতিবারই নতুন। যেগুলো অভিকে ভাবতে বাধ্য করেছে, সেগুলো আসলে ‘যাদুবাস্তবতার গল্প’।

‘অন্তর্বাহ’ উপন্যাসে আবহমান বাংলার অপরূপ রূপ ফুটে উঠেছে। বাংলার নদী, খাল, বিল, শস্য সবই এসেছে উপন্যাসের বিভিন্ন অংশে। জহুরির চোখে যেভাবে আসল হীরা ধরা পড়ে তেমনি উপন্যাসে জহুরিরূপে তুলে ধরেছেন বাংলার শ্রমজীবী মানুষদের। তাদের হরেক রকম পেশার সাথে পাঠককে পরিচয় করিয়ে দেন নতুন আঙ্গিকে। বারুজীবী (পানচাষী), কর্মকার, নরসুন্দর এ কয়েকটি শ্রেণির পেশার কখা না উল্লেখ করলেই নয়। ঘটনা প্রবাহে কখনো মনে হতে পারে পাঠক কোন সামাজিক-পারিবারিক উপন্যাস পড়ছেন। কারণ ‘অন্তর্বাহ’ প্রতিনিয়তই সামাজিক জীবনের জলতরঙ্গের সুনিপুণ বর্ণনা করেছে। অভিমন্যুদের পারিবারিক অবস্থা তৎকালীন সময়ে যথেষ্ট ভাল ছিল। অভির পিশির বিয়েতে তাঁর বাবা হাজার খানেক মানুষকে নিমন্ত্রণ করেছিলেন। আর রাতে জ্বালানো হয়েছিল বিশেষ ধরনের বাতি। উপহার হিসেবে বোনকে দিয়েছিলেন পঞ্চাশ ভরি সোনা। এসব বর্ণনা অভিদের সামাজিক এবং পারিবারিক অবস্থার একটা সুস্পষ্ট চিত্র এঁকে দেয়। জন্ম গ্রামে, বেড়ে ওঠাও গ্রামে; তাই ফরিদপুরের মধুখালী, কামারখালী, কোড়কদী, মছলন্দপুর অভির শিকড়ের ঠিকানা; জন্ম-জন্মান্তরের বাঁধন। উপন্যাসের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে খুব স্বাভাবিকভাবে পরম আবেগে গ্রামগুলোর নাম চলে এসেছে।

অভিমন্যু’র স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে তারা হয়ে আলো ছড়ায় তাঁর শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষকবৃন্দ; দেবেন্দ্রবাবু, ইসলাম স্যার, সুধীর স্যার, নন্দ স্যার প্রমুখ। তবে অভি’র মৃদঙ্গ শিক্ষকের নামটি তিনি মনে করতে পারেন না। শুধু এটুকু মনে আছে তিনি ছিলেন একজন নরসুন্দর। উপন্যাসের বিভিন্ন পর্যায়ে এসেছে উল্লিখিত শিক্ষকদের কথা। কখনও বর্ণনার সীমানায়, কখনও ঘটনার সীমানার তুঙ্গে এসেছে এসব চরিত্র। যেমন, সুধীর স্যারকে অভি বিশেষভাবে মনে করেছেন। তিনি ছিলেন তাঁদের পিটি স্যার। অ্যাসেমব্লিতে প্রথমে কোরআন থেকে পাঠ করা হত; তারপর গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক এ তিন ধর্মগ্রন্থ থেকে সুধীর স্যার একাই পাঠ করতেন। অভি’র বিশ্বাস, সকল ধর্মের বাণী শেখানোর কারণে তিনি ধর্ম নিরপেক্ষতাকে সবার উপরে স্থান দিতে পেরেছেন। আর সে কারণেই অভি তাঁর উপন্যাসে বলেছেন, “নিজ ধর্মের উদারতা ও পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের মতো বিষয়গুলো যতবেশি আমরা আমাদের প্রাত্যহিক চর্চ্চার ভেতরে আনতে পারব, তত বেশি সম্ভব হবে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান।” যাপিত জীবনে তিনি নিজেও এ মতাদর্শকে বুকে লালন করে ধর্মের ঊর্ধ্বে থেকে মনেপ্রাণে বাঙালি হতে চেয়েছিলেন। তাইতো হিন্দু ধর্মেও মানুষ হয়েও তিনি প্রতি ঈদে নতুন পাঞ্জাবী কিনে এ ধর্ম অনুষ্ঠান উদযাপন করতেন। অভির স্মৃতিপটে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালে যখন অভিরা উদ্যোগ নিয়েছিল দাসপাড়াতে সরস্বতী পূজো করার। উদ্যোমী এবং উদ্যোগী কিশোরদের পকেটে টাকা ছিলনা। তা’বলে থেমে থাকেনি আয়োজন। চাঁদা দিয়েছেন জালার চাচা এবং তাঁর মতো অনেকেই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থানের যে চিত্র চিত্রিত হয়েছে তা বাঙালি জাতিসত্তার ধারক ও বাহক। যা কালে কালে নষ্ট করে সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষে পরিণত করেছে একশ্রেণির ধর্ম ব্যবসায়ী।

উপন্যাসে সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন, শ্রদ্ধাবোধ ফুটে উঠেছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আঙ্গিকে। ঔপন্যাসিক এক পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি ঘটনার বর্ননায় বলেছেন, “খারদিয়ার রাজাকাররা আসতেছে। ফিসফাসের সাথে সাথে সবাই যেন প্রস্তুত ইট-পাঁজারগুলোর কাছে। পাশে রাখা ধারালো সুড়কিগুলো। নিচে বাড়ির চারপাশ জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে শত শত মানুষ। হুঙ্কার শোনা যায় আমজেদ শেখের। অন্য উঠোনে প্রত্যুত্তর দেয় ইসরাইল শেখ। কি বিশাল ঢাল এক একজনের হাতে।রয়েছে সড়কি, রামদা, তরবারি। কিছুক্ষণ পরপরই কয়েকজনের এক একটি দল চক্কর দিচ্ছে বাড়ির চারপাশে দিয়ে। দূরে দূরে জ্বলছে মশাল। জীবন বাজি রেখে এতগুলো মুসলমান মানুষ সেদিন দাঁড়িয়েছিল অভিদের আশ্রয়স্থলের চারপাশ ঘিরে। ধর্মীয় পরিচয় তাঁদের ঔদার্যের পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি। তিনতলা ছাদের উপর থেকে দেখা সে দৃশ্য কি অস্পষ্ট হবার।” এর মাধ্যমে ‘অন্তর্বাহ’ হয়ে উঠেছে মনুষত্ব ও মানবতাবাদ ধর্মের জয়রথ, জাগ্রত করে অহিংস সম্প্রদায়বোধ। বাঙালির পরিচয়ে লুকিয়ে থাকা নানা লোকজ উৎসব, সার্কাস যেন হাজার বছরের ঐতিহ্যের সারথি। গ্রামীণ জীবনে এসব নিয়ে থাকে নানান সুখ স্মৃতি। সেগুলোর কোনো অংশে বাদ পড়েনি ‘অন্তর্বাহ’র পাতা থেকে। অভিমন্যু চরিত্রে একটা বড় গুণের পরিচয় করিয়ে দেয় তাঁর বইপ্রেম। সুদীর্ঘ সময় ধরে বিরতিহীনভাবে বই সংগ্রহ এবং পড়ার বিষয়টি এসেছে। প্রথমদিকে স্কুলে বই নিয়ে যাওয়ার জন্য এ্যালুমিনিয়ামের বাক্সটিকে পরবর্তীকালে ব্যবহার করা হতো একটা ছোট লাইব্রেরি হিসেবে। তাতে ছোটবোন বাঁশরীর নাম অনুসারে কাগজ সাঁটা হয় ‘বাঁশরী-লাইব্রেরি’। চলতে থাকে বই সংগ্রহ ও পড়া। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়ার সময় অভির সংগ্রহ আরও বাড়ে। এখন অভি বই রাখে আলাদা একটি ঘরে।‘অন্তর্বাহ’ অভিমন্যু দাসের জীবনের জলছবি। ঔপন্যাসিক সে ছবিকে প্রদর্শন করেছেন ফ্রেম থেকে ফ্রেমে। উপন্যাসে হাসির উপকরণ যেভাবে উপস্থিত হয়েছে তাতে পাঠকমনকে দৃঢ়ভাবে ‘অন্তর্বাহ’ আটকে রাখে। একটি অংশে অভিদের বাড়িতে ‘নিষিদ্ধ মুরগি’ রান্নার বর্ণনা এসেছে এভাবে, “এক সময় শুরু হত লবণ চাখার পালা। দু’বার পাঁচবার করে চাখাচাখির পর বারবার করে লবণ হলুদ মরিচ দেওয়ার পর যখন মাংস উনুন থেকে নামার সময় হতো ততক্ষণে ছোটদের চোখ ঢুলুঢুলু। কিন্তু এ কথা স্বীকার করতেই হবে যে, ঘুম দেবতা মুরগি দেবতার মতো এতো শক্তিশালী ছিল না। আর তাই দু’একবার ঘুম দেবতার জয়ের সম্ভাবনা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত মুরগি দেবতাই জয়ী হতো।”

অভিমন্যু’র স্মৃতিতে ভাস্বর মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধকে ‘গণ্ডগোল’ নামে শুনতে হয়েছে পুরো কৈশোর জুড়ে। চোখের সামনে ঘটা সত্যকে বিকৃতভাবে পরিচিত করার অপপ্রয়াস দেখে প্রতিনিয়ত অভির হৃদক্ষত বেড়েছে। মুক্তিযুদ্ধে কীভাবে মানুষ নিঃস্ব হয়েছে, ভারতে শরণার্থী হয়েছে এগুলো অভির দেখা। আবার অভির স্মৃতির পাতায় মুক্তিযুদ্ধের একটি অংশের বর্ণনা ঔপন্যাসিক এভাবে করেছেন, “অভির মনে পড়ে, জয়নাল চাচার বাড়িতে ওরা যখন বারান্দায়; মাসহ সব ভাইবোনকে সারি বেঁধে দাঁড় করানো হয়েছে। গুলি করা হবে। চাচার বাড়ি সংলগ্ন মাঠের তাল গাছটির সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে অভিদের বাবাকে। বড়দা কোন পাড়াতে যে লুকিয়ে! সকলকে রক্ষার দায়ভার যেন মেজদার। কত বয়স তার তখন? চৌদ্দ? হাফপ্যান্ট পরা সেই কিশোরটি তখন দৌড়ে দৌড়ে এর ওর পায়ে পড়ছে আর কেঁদে কেঁদে বলছে, ছেড়ে দ্যান আমাদের বাবাকে। পা ধরতে গিয়ে লাথিও কি খেয়েছিল সেই রাজাকারের যে কিনা জয়নাল চাচকেও লাথি মেরেছিল হিন্দুদের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে। সেই লাথির পা’টির মালিকের মুখে এখন মেহেদী রাঙানো দাড়ি। জাতীয় টেলিভিশনে ধর্ম নিয়ে বাকোয়াজি করে। আর জয়নাল চাচা রোগে ভুগতে ভুগতে এতই কষ্টক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন যে গরিব মানুষটি গামছা ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করার বেশি কোন বিলাসিতা সৃষ্টিকর্তা তাঁর কপালে রাখেননি।” সময়ের আবর্তে রাজাকারেরা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আর মুক্তিযোদ্ধারা হেরেছে জীবনযুদ্ধে ইতিহাসের এমন নির্মম বিচার ‘অন্তর্বাহ’র লেখক চরিত্র অভিমন্যু’র অন্তর্দহনকে বাড়িয়েছে ক্রমাগত।

গল্প উপস্থাপন করতে না পারার কথা স্বীকার করেছেন অভি উপন্যাসের শুরুর দিকে। নিজেকে একজন শ্রোতা হিসেবে পরিচিত করেছেন। অথচ যার সহজ সরল বর্নণায় নিমিষেই সমাপ্তিতে পৌঁছায় ‘অন্তর্বাহ’। ঔপন্যাসিকের নিজস্ব বলার ঢঙ, প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগ, প্রাজ্ঞ উপস্থাপন পাঠকমনের খোরাক যোগায়।

লেখক : কবি, ঔপন্যাসিক ও আলোকচিত্রী ।